সুপারি বীজ থেকে চারা উৎপাদন পদ্ধতি
বীজ থেকে মানসম্মত সুপারি চারা তৈরির পূর্ণ কৌশল
পরিচিতি
সুপারি (Areca catechu) বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। চারা রোপণ করলে ২৫–৩০ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। তাই মানসম্মত চারা উৎপাদন গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। সঠিক বীজ নির্বাচন, পরিচর্যা ও বপন পদ্ধতি জানলে কৃষক সহজেই ভালো মানের চারা তৈরি করতে পারেন।
সুস্থ বীজ নির্বাচন
- ৫–৬ বছর বয়সী সুস্থ গাছের ফল বেছে নিতে হবে।
- সম্পূর্ণ পাকা, বাদামি রঙের ফলই বীজ হিসেবে ব্যবহার করুন।
- ফল সংগ্রহের পর ছায়াযুক্ত স্থানে ৭–১০ দিন শুকাতে হবে।
বীজতলা প্রস্তুতি
চারা উৎপাদনের জন্য উঁচু ও পানি নিষ্কাশনযোগ্য জমি নির্বাচন করতে হবে। বেডের মাপ ১০ মিটার লম্বা ও ১ মিটার চওড়া রাখা ভালো অথবা জায়গা নির্দিষ্ট করে ৫ ফুট × ৫ফুট দূরত্ব হলে ভালো হয়। দোআঁশ মাটির সঙ্গে পচা গোবর মিশিয়ে বেড তৈরি করতে হয়।
- বীজতলায় প্রতি বীজ ২৫ সেমি দূরত্বে বপন করুন।
- বীজের মোটা দিক নিচে দিয়ে ৩ সেমি গভীরে দিন।
- বপনের পর হালকা ছাই বা শুকনো লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
অঙ্কুরোদগম ও পরিচর্যা
সুপারি বীজ অঙ্কুরোদগম হতে সাধারণত ২–৩ মাস সময় লাগে।বীজতলায় নিয়মিত পানি দিতে হবে, তবে পানি জমে থাকা যাবে না। ছায়াযুক্ত পরিবেশে রাখলে চারা দ্রুত বেড়ে ওঠে।
চারা স্থানান্তর
বীজ চারা গজানোর পর পলিব্যাগের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে।১২–১৮ মাস বয়সী চারা রোপণের উপযোগী হয়। মাঠে রোপণের সময় ৫ ফুট × ৫ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। গর্তে জৈব সার মিশিয়ে রোপণ করলে চারার বৃদ্ধি ভালো হয়।
রোগ ও পোকামাকড় দমন
চারায় সাধারণত পচন ও পাতায় দাগ পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিমপাতার রস,জৈব কীটনাশক স্প্রে করলে এই সমস্যা কমে যায়।
উপসংহার
সুপারি বীজ থেকে চারা উৎপাদন সময়সাপেক্ষ হলেও লাভজনক। ধৈর্য ও যত্ন নিয়ে কাজ করলে উন্নত মানের চারা তৈরি সম্ভব, যা কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সহায়তা করে।রাস্তার দুপাশে চারা রোপণ করলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
👉 আরো পড়ুন: বাংলাদেশে শিম চাষের উপযুক্ত সময়, পদ্ধতি ও যত্ন।